• প্রপাগান্ডা

    সবচেয়ে উঁচু সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে যাজক বলছেন- সকলের ভালো হবে।  শাঁখ বেজে উঠছে মহল্লায়। উলুর শব্দে চাপা পড়ে যাচ্ছে আগুন পোহার গান, বেশ্যাদের হাসি। পা তুলে উলটে মরে থাকছে কিছু অকৃতজ্ঞ চড়াই। আপিসফেরত, আরও ঘন করে জড়িয়ে নিচ্ছি পশমী মাফলার।  বাংলার ঠেকে বসে বৃদ্ধ মার্ক্স বিনিময়ের শেষ সূত্র লেখার চেষ্টা করছেন। ভারতবর্ষের অসমান মাটিতে রাখা কাঠের […]

  • দেবীপক্ষে

    ১ দেবীপক্ষের সূচনাকালেই মুনাইয়ের জন্মদিন। দু’আজলা ফুল তুলে অঞ্জলি দেব? বিসর্জনের ঘাটে দাঁড়িয়ে জলের ভেঙে যাওয়া দেখছি। শরতের শিশিরে ভিজে যে জন্মদিন হৃদয়ে হৃদয় রেখে কেটেছে, সেখানে ছিল দেবীদর্শন। এখন শহর থেকে দূরে ছায়ার উপর কাটাকাটি আর জীবনের সঙ্গে হেডটেল। স্মৃতিরা বড় অবাধ্য। দেওয়াল মানতে চায় না। ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত হয় আবার একসময় ঘুমিয়েও পড়ে। […]

  • গুচ্ছ কবিতা

    ১ সকাল থেকে ধিকি ধিকি আঁচ আড় ভাঙ্গে ধোঁয়া ওঠা কাপে তার কিছুটা ঢেলে ফেলে চুমুক দিই এদিক ওদিক গরম ছড়িয়ে নামে সেদ্ধ, ভাপা, ঝোল – অগ্নিমান্দ্যে ভোগে দুপুর তার জন্যে রুচিকর সন্ধে ঘরে ফিরলে শীতল মধ্যরাতে ছলকে ওঠে জল, মাছের শরীর জাগে, আঁশগন্ধ ছড়ায় তাকে ঢেউ দিই, সমুদ্রস্নান দিই পুষিবেড়ালির মত ঢেলে দিই পাতের […]

  • গলুই জীবন

    গলুই জীবন রৌদ্র তুমি পর্দানশীন, সড়কপথে অগাস্টশেষে দুপুরখানি একলা বড় রৌদ্র, তুমি সূর্যধোয়া জলের তোড়ে ভাসিয়ে নিলে ব্যস্ত শহর, ভিতরঘরও আড়াল খুঁজি সমস্তদিন হন্যে হয়ে যতির পরেও থাকছে পড়ে শব্দসেনা চুপকথাদেশ কোন মোহনায় ডুবলো এসে! শূন্য, তুমি আমার কাছে আর আসো না অপথে যাই, পায়ের ছাপে পথের শুরু দ্রিমদ্রিমাদিম আগল ভাঙে বাঁকের শেষে হলুদনদী খুব […]

  • খিদে

    বেপরোয়া দৌড়ে শেষ হয় বৈজয়ন্ত দিন আমি উবু হয়ে বসি, ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ঢাকা নিজস্ব পাড়াটি গুটিয়ে নেয় দৈনন্দিন কলহ, বেসাতি আর শরীরের স্বেদ প্রতিদিন মৃত্যু হয় ছ’জন যুবকের প্রতিদিন জন্ম নেয় ছ’জন যুবক ভালোবাসা হৈ-চৈ, আদর্শ ব্যাপারী আমি উবু হয়ে বসি, রাসবিহারী মোড়ে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ঠিক নিচে সঞ্চয়ী ফুটপাতঘরে ভাতের সুবাস যেকোন খিদের রঙ সাদা […]

  • উত্তাপ

    উত্তাপ চেপে আছো তুমি, বোঝ না, বুকের ভেতর  চাপা আছে সেই সুপ্ত জপমালা।  না হয় আবার নতুন ভাবে শুরু করি বস্ত্রশুদ্ধি,   সন্ধি চাই,  পরিপাটি  জীবনের সাথে না হয় আর একবার বোঝাপড়া হোক  আবার নিজের জাগায় ফিরে ভাবি।   দেখো তোমার মাঝে একটা পৃথিবীর শৃঙ্খল আছে  তাকে সাজিয়ে গুছিয়ে শাসনের আওতায়  মন্ত্রণার চৌকাঠে স্বস্তির পরাকাষ্ঠায় […]

  • সজ্জাতুর

    সজ্জাতুর তুমি  আতুর ঘুমেও মরা চাঁদ তোমার গা বেয়ে নেমে আসে    সবাই যখন ঘুমোয় মাঝ রাতে জেগে ওঠো তুমি  কিছু মানুষ আর্দ্রতার ছায়ায় ঘুমের দুঃস্বপ্ন দেখে।  আর কতটা জায়গা চাই উড়ে যাবার ? এখানে প্রশস্ত আকাশ নেই অথচ আরো হালকা হয়ে যেতে যেতে শরীর  দুঃখ বিনা জীবনের অনুভব মরে যায়  পাতার ঘরে যে বসে […]

  • রূপান্তর

    আমার নতুন কলসি থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখে তাকাই নদীর খোলা বুকে, জল নেই, আছে ধোঁয়া সমস্ত নিসর্গে আজ সরকারি ম্যাজিক!  আঙুল-কাটার নিয়ে নেমে আসছে ব্রিটিশ বণিক মসলিন-বাজারে, যারা ওদের কপালে টিপ দিচ্ছে  তাদের আঙুল নেই কারও, সূর্যের শরীর থেকে আজ মাংস খুবলে খাচ্ছে অভুক্ত ও হিংস্র চাঁদবেনে পলকে রঙিন হল সাদা-কালো পূর্ণ একটি গ্রাম […]

  • এসো, প্রশন্তির এই ঘর-দোরে

    এসো, প্রশন্তির এই ঘর-দোরে এসো, প্রশান্তির এই ঘর-দোরে ঋজু মোম জ্বালি জ্বালা যন্তণার সমস্ত পোশাক খুলে আমার খালি বুকে হাত বোলাতে বোলাতে তোমার ঝাল-মশলা ডিটারজেন্ট অধ্যুষিত হাতের খরা ধানজমি হয়ে যাক কররেখা দিয়ে বয়ে যাক সেচ দপ্তরের ছাড়া সময়ের জল বাঁচুক সংসারি বানমাছ, কাঁকড়া দম্পতি মেঠো পথের মতো হাতে জড়িয়ে ধ’রে দৃষ্টিতে তুলে ধরো জীবনের […]

  • আবহ

    আবহ আজ বস্তু ছেড়ে আলো  কিছুতেই যেতে যে চাইছে না তা নিয়েই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হোক আলোচনা   ‘এতো মায়া’ বলেছিল নির্জন মানুষ বলেছিল ‘কথার ভিতরে সেই মাদুরের মণিহারি বোনা’   লোকায়ত কালচে হিমে ভিজে যাচ্ছে পুরোনো কামান, এলোমেলো চুল, মাথাপিছু প্ররোচনা   ছোট-ছোট সত্যে আজ চমকে উঠছে মন এ নিয়েই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হোক […]