• তর্পণ

    দুই হাত পুরে জল নিয়েছি মা গো মুখ খোলো এই আলগা মুঠি এর আঁধারের মূলে আছে স্রোতস্বিনী কোনো সপ্তদ্বীপের মাটি কোটি কোটি বৎসরের প্রায় ধুয়ে ধুয়ে চন্দনপাটায় পড়ে বরষাসম্ভবে তাই মুঠি ভরে নিয়ে আসি মুখে পুরে দিই আলো জল আলো আলো আলো জল অথচ এ মহালয় মাতৃচ্ছায়াহীন। এ মন্দিরে দেবী নাই। আবক্ষ গাহন করি নদীগর্ভে […]

  • আক্ষেপ

    চাবুক সইতে পারি, যদি ওহে দীননাথ, ঘোড়া চৈতন্যে কেশর পাই, ক্ষুরে বাজে নূপুরের দূর আমাকে যথেচ্ছ মারো কিন্তু প্রভু রণভূমি জোড়া দিয়ে যাও শত্রু কিছু, জিতে আসি দস্যুর ত্রিপুর তা নয়, নিশষ্প মাঠে কেটে গেল আঠেরো বছর! রশিটি নামিয়ে রেখে কথকতা শুনে গেল দিন প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে, হে মাধব, জরাদীর্ণ স্বর চাকায় উঠেছে ঘাস, কপিধ্বজ […]

  • অপরিচিতাকে

    দূরের শহরখানি ভালো থাক। তোমার শহর, তাই। তোমার ধুলোর পথ। নদীও তোমার।   তুমি তাকে চিনিয়েছো। হাত ধরে নিয়ে গেছ গ্রীষ্মদুপুরে। জল নেই। লোক নেই। শুকনো খাতের বুকে বালি আর নুড়ি। মায়ার পাথর।   একদিন ওইখানে দেখা হবে। ঠিক। তুমি দেখো। একদিন ওইখানে তোমার আঙুল ছুঁয়ে দেব।   যতখুশি আড়ালে দাঁড়াও। যত পারো, দূরে যাও তুমি। চিনে নেবো।

  • শেষ চিঠি

    তোমাকে চিনেছি, তাই, চলে গেলে নির্বিকল্প দূরে বীজমন্ত্র উচ্চারণ করবার অবকাশ দিলে না। যদি বেঁধে ফেলি? যদি মায়া ভেঙে যায়? যদি…   ততদূর ভাবনার সাহস হলো না। দূরে থাকো। ভালো থাকো।   যেভাবে হাওয়ার সাথে সুতোর বাঁধনহীন ঘুড়ি উড়ে যায়…

  • কালপুরুষ স্যার

    এখনও আপনি বুঝি আগের মতন, স্কুলের রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছেন? বিপথে যাওয়ার জন্য ডাক দিত যারা, যে সমস্ত লাল নীল ঢেউ বৃথাই পেরিয়ে গেছে, আমরাও কেউ অনন্ত সাহস নিয়ে ভাঙ্গিনি পাহারা, ঢেউ ছুঁতে এগোইনি সে জীবনে আর। অথচ ভেসেছি ঠিকই, মেঘে মিশে গিয়েছে পাহাড় ট্রেন চলে যাবে দূরে আরও কিছুদিন বাদে মফসসল সীমানা ছাড়িয়ে । […]

  • চুমকির জন্য

    চুমকির জন্য চুমকি আমার ছোটবোন। সে যদি লিখতে বলে তবে নিজের মগজখানি খুঁড়ে, তাকে কিছু লিখে দিতে হবে। কী থাকবে সেই লেখাটিতে? যা দেখেছি এ’ জীবন জুড়ে কিছুটা ঝর্ণা দিয়ে ঢাকা, বাকিটুকু দারুণ পাথুরে। শুরুতে থাকবে এক গ্রাম। রাঙামাটি পথে ছোটোবেলা হেঁটে যাবে। সারা পায় ধুলো। কানা বিল… চড়কের মেলা। ভোর বেলা মা ডাকলে রোজ […]

  • কাঁচালঙ্কা-মুরগী উপাখ্যান

    আয়রে দিদি, সতীন আমার, নাতির মিষ্টি বউ; ঘোমটাখানা খোল না এবার, দেখছে না তো কেউ। এই দিকে আয় শেখাই তোকে দারুন একটা পদ; ঝাল ছাড়া তার মন ওঠেনা, নাতি বেজায় বদ। তোর হাতে এই ভাঁড়ার ঘরের দিচ্ছি চাবিখানি, আলো করে থাকিস দিদি, হয়ে বাছার রানী। আয় দেখি ভাই, আজকে বরং একবারটি রাঁধ। নাতি আমার বুঝবে […]

  • অগণতান্ত্রিক

    অগণতান্ত্রিক ছায়া ছিল গাছের তলায়, মাথা ছিল জলের নীচে ভালবাসার শরীর ধরে জন্ম নিল কাঁকড়া বিছে এখন যদি প্রশ্ন করি, কী দিয়ে সে বানাল মন ? কমবে না আর কিছুই জানি, কেবলমাত্র আমার ওজন… উত্তরে-দক্ষিণে-পূর্বে ঘুরবে যখন পাখির পালক দৃশ্যগুলো তোমার কেনা আমার শুধু দেখার দুচোখ আমার কেবল ধরার আঙুল মড়মড়িয়ে ভাঙার পাঁজর ভূকম্পনের পর […]

  • শারদীয়

             এই মেঘান্ত ঋতুতে অর্জনের ঋতু বর্ষা। শরৎ, সর্জনের। এবং বিসর্জনের। বিসর্জনে বিসর্জনে মেঘ আজ বৈধব্যধবল। সৃজনে-রোমান্সে-কৃত্যে নিচে ফুল্ল ভূমণ্ডল।   শরৎ, শারদীয় কাশফুলের আভারূপে বিচ্ছুরিত ওই ফুরফুরে ঋতুরেণু আজ আকাশে বাতাসে নদী ও পাহাড়ে শাদায় সবুজে… এই সেই মহাযোগ-মুহূর্ত, যখন বহু-বহু বিন্দুর আত্মাহূতির মধ্য দিয়ে সফল, সম্ভব হয়ে ওঠে প্রকৃতির প্রজনন। উন্মাতাল ঝড়ের মন্থন […]

  • দাম্পত্য

    দাম্পত্য আসুন মিস্টার বক্সী, এই আমাদের তিন কামরার ফ্ল্যাট। ঘুরে ঘুরে তুলে নিন গোপন সংকেত। বিয়েতে পাওয়া ফুলদানি, সময়চিহ্নিত। প্রেম কি নীল নয়নতারা- রোজ ফুটবে দিব্যি দিয়েছিল কেউ, বলুন? দেখুন চিরুনীতে দীর্ঘ অপেক্ষা লেগে আছে। সত্যবতীকে কি বলে এসেছেন আজ? কখন ফিরবেন? কলঘরে উঁকি দিতেই পারেন। দরজার পেছনে রাখা আমার অন্তর্বাস। খুঁজুন অপরাধবোধ, ইনস্টিংটের অসহায় […]